পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সাবেক গুলদি এলাকার আহমদ মিয়ার স্ত্রী হাবিয়া খাতুন (৮০)। সেলিম, ওমর আলী ও মীর কাশেম নামের ৩ পুত্র সন্তানের মা তিনি। পুত্র সেলিম বর্তমানে প্রবাসে থাকলেও অন্য দু’ছেলে এলাকায় রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে অভাবগ্রস্থ পুত্র মীর কাশেমের সাথেই থাকেন বৃদ্ধ পিতা আহমদ মিয়া ও বৃদ্ধা মাতা হাবিয়া খাতুন।
অন্য দু’ছেলে তাদের ভরণ পোষন তো দূরের কথা বছর শেষেও দেখা করে খোঁজ খবর নেন না। এমনকি প্রবাসী সেলিম ও ওমর আলীসহ তাদের পরিবারের হাতে বার বার নিগৃহ ও হামলার স্বীকার হয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে দিনের পর দিন কাটালেও খবর পর্যন্ত নেন না।
পুত্র ওমর আলী তার স্ত্রী হাছিনা বেগম ও অপর পুত্র সেলিম উদ্দিনের স্ত্রী আনজুমান আরা বেগমের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বৃদ্ধা হাবিয়া বেগম গত ১০দিন ধরে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে দিন কাটালেও খবর নিচ্ছেনা কেউ। ইউপি কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ বৃদ্ধা হাবিয়া বেগমের।
যা অল্প সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পুত্র মীর কাশেম। সে মায়ের চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছে।
এমন করুণ অবস্থায় বৃদ্ধার স্বামী আহমদ মিয়া গত ১১ অক্টোবর পেকুয়া সদর ইউপি কার্যালয়ে পুত্র ওমর আলী ও দু’পুত্র বধুকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগেও বাদি আহমদ মিয়াকে মারধর করায় একই বিবাদীদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। তাও পেকুয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যানকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু সে বিচার তো এখনো তাদের ভাগ্যে জুটেনি। সর্বশেষ মা’কে মারধর করে গুরুতর আহত করার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরও তাৎক্ষনিক কোন ব্যবস্থা নেয়নি গ্রাম আদালত। উল্টো বিবাদীদের ১মাসের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেন গ্রাম আদালতের শালিষী বিচারকগণ। যার কারণে মায়ের আক্ষেপের শেষ নাই।
১০দিন ধরে হাসপাতালে শুয়ে থাকা বৃদ্ধা মা হাবিয়া বেগম বলেন, দু’ছেলে সেলিম উদ্দিন ও ওমর আলীর পরিবারের হাতে বার বার হামলার শিকার হয়ে আহত হচ্ছি আমরা। ছেলে মেয়ে জন্ম দেওয়া আমাদের পাপ। এছাড়াও পিতা-মাতার জন্য কোন বিচার এ পৃথিবীতে না থাকলেও খোঁদার কাছে রয়েছে। কান্না জড়িত কন্ঠে মা হাবিয়া বেগম আরো জানান, আমার স্বামীকে মারধর করার বিচার না করায় তারা বেপরোয়া হয়ে আমাকেও মারধর করে গুরুতর আহত করে। এক ছেলে মীর কাশেম ঋন নিয়ে যা অল্প চিকিৎসা আমাকে করিয়েছে। এখন ঠিকমত ওষুধ খেতে না পেরে দায়ের কোপে কাটা হাত পোঁচন ধরছে। কি আর করা ? বিচার আল্লার কাছেই দিলাম।
পেকুয়া সদর ইউপি সদস্য ইসমাঈল সিকদার ও প্যানেল চেয়ারম্যান মাহাবুব করিম জানান, আহমদ মিয়ার লিখিত একটি অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন বিবাদীরা সময়ের আবেদন করার তাদের সময় দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ভিকটিম বৃদ্ধা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায়ও এর একটি কারণ। মায়ের বিচার করতে কেন সময় ক্ষেপন জানতে চাইলে প্যালেন চেয়ারম্যান এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন।
তবে চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ জানান, আমি দু’সপ্তাহ ধরে দাতের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছি।
পাঠকের মতামত: